সূচিপত্র
১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজন: ইতিহাসের মোড় ঘোরানো অধ্যায়
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের বিভাজনের মাধ্যমে জন্ম নেয় দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র—ভারত ও পাকিস্তান। পাকিস্তান গঠিত হয়েছিল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে, যার দুটি অংশ ছিল: পশ্চিম পাকিস্তান (বর্তমান পাকিস্তান) এবং পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ)। এই বিভাজন ছিল এক বিশাল জনগোষ্ঠীর স্থানান্তর এবং সহিংসতার সূচনা। প্রায় ১৫ মিলিয়ন মানুষ তাদের বাসস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয় এবং আনুমানিক ২ মিলিয়ন মানুষ এই সহিংসতার শিকার হয়।
বাংলাদেশের জন্ম: মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা
পূর্ব পাকিস্তানে ভাষা, সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক বৈষম্যের কারণে অসন্তোষ বৃদ্ধি পায়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী 'অপারেশন সার্চলাইট' পরিচালনা করে, যা ব্যাপক গণহত্যা ও নিপীড়নের সূচনা করে। এর প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, যা ভারতের সমর্থনে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে শেষ হয়।
অপারেশন সিন্দুর: ২০২৫-এর নতুন সংঘাত
২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন ভারতীয় পর্যটক নিহত হন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলিকে দায়ী করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ৭ মে ভারত 'অপারেশন সিন্দুর' চালু করে, যার মাধ্যমে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে নয়টি স্থানে বিমান ও ড্রোন হামলা চালানো হয়। এই হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত হন এবং বহু মানুষ আহত হন।
পাকিস্তান এই হামলাকে 'যুদ্ধের ঘোষণা' হিসেবে বিবেচনা করে এবং প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দেয়। দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে গোলাগুলি ও বিমান হামলার ঘটনা ঘটে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা: বৈশ্বিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা
ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক যুদ্ধ ৫০ থেকে ১২৫ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু ঘটাতে পারে। এছাড়া, পারমাণবিক বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট ধোঁয়া ও কার্বন কণাগুলি বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ে সূর্যালোক কমিয়ে দিতে পারে, যার ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। এটি বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষের কারণ হতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা
এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি হ্রাস করতে উভয় দেশের মধ্যে সংলাপ ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জরুরি।